টিকটকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায়, ১৯ জুনের পর কী সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প?
জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ কোটির বেশি মানুষের দৈনন্দিন বিনোদনের মাধ্যম। কিন্তু এই অ্যাপটির ভবিষ্যৎ এখন ঝুলে আছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়সীমার ওপর। মার্কিন কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চীনা মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে আগামী ১৯ জুনের মধ্যে টিকটকের যুক্তরাষ্ট্র শাখা বিক্রি করতে হবে, নইলে অ্যাপটি দেশটিতে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি সময়সীমা আবারও বাড়াতে পারেন।

ট্রাম্পের অবস্থান ও রাজনৈতিক বাস্তবতা
ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমি চাই এই চুক্তি সম্পন্ন হোক। টিকটক একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় অ্যাপ। এটি নিরাপদ থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি আরও জানান, যদি চুক্তির কাজ এগোতে থাকে, তাহলে সময়সীমা বাড়ানো সম্ভব।
এর আগে কংগ্রেস প্রথম সময়সীমা দিয়েছিল ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর তা প্রথমে এপ্রিল, পরে ১৯ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
চীন-মার্কিন উত্তেজনার পেছনে মূল কারণ: শুল্কনীতি
টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রের অংশ বিক্রির পরিকল্পনা এক নতুন মার্কিন মালিকানাধীন কোম্পানির মাধ্যমে বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। কিন্তু চীনের অনাগ্রহ এবং বাণিজ্যিক শুল্কসংক্রান্ত টানাপোড়েন এই চুক্তির প্রধান বাধা। ট্রাম্প প্রশাসনের চীনা পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের জবাবে বেইজিংও অনড় অবস্থানে রয়েছে।
আইনি ও রাজনৈতিক বিতর্ক
ডেমোক্রেটিক দলের সিনেটররা দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্টের একতরফাভাবে সময়সীমা বাড়ানোর আইনি অধিকার নেই। পাশাপাশি তারা বলছেন, আগের চুক্তির প্রস্তাবগুলো যুক্তরাষ্ট্রের আইনগত মানদণ্ড পূরণ করেনি।
তবে বাইটড্যান্সের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, চুক্তির কাজ এখনো চলছে এবং আলোচনা এগোচ্ছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যনীতি নিয়ে সমঝোতা প্রয়োজন।
টিকটকের জনপ্রিয়তা ও নির্বাচন প্রভাব
বিশ্লেষকদের মতে, টিকটক শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের মন জয় করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ট্রাম্প নিজেও স্বীকার করেছেন, এই অ্যাপটির মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যায়।
টিকটকের যুক্তরাষ্ট্রে ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো অনিশ্চিত। ১৯ জুনের সময়সীমা সামনে রেখে চলছে কূটনৈতিক আলোচনার পালা। ট্রাম্প চুক্তির পক্ষে অবস্থান নিলেও চীন-মার্কিন বাণিজ্য উত্তেজনা এবং রাজনৈতিক জটিলতা এই প্রক্রিয়াকে ধীর করছে।