ডিজিটাল নিরাপত্তা জোরদারে জাতীয় সংলাপ
বাংলাদেশের তরুণদের জন্য নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ নিশ্চিত করতে জাগো ফাউন্ডেশন ও টিকটকের যৌথ উদ্যোগে ঢাকার বনানীর প্লাটিনাম গ্র্যান্ড-এ অনুষ্ঠিত হলো “জাতীয় সংলাপ: যুব সমাজ ও অনলাইন নিরাপত্তা”। এই গোলটেবিল আলোচনায় নীতিনির্ধারক, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, একাডেমিক বিশেষজ্ঞ ও যুব প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা বাংলাদেশের বর্তমান ডিজিটাল নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেন এবং এটি আরও উন্নত করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

এই সংলাপটি ২০২২ সালে চালু হওয়া জাগো ফাউন্ডেশন ও টিকটকের যৌথ উদ্যোগ “সাবধানে অনলাইনে” প্রকল্পের একটি অংশ। ২০২৪ ও ২০২৫ সালে এই প্রকল্পের “ইয়ুথ অ্যাম্বাসেডররা” দেশের ৬৪টি জেলার ২৫৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এর মাধ্যমে প্রায় ১,০০,০০০ শিক্ষার্থী সরাসরি অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন হয়েছেন। সংলাপে প্রকল্পটির সাফল্য, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।
ডিজিটাল ঝুঁকি ও করণীয়
গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা তুলে ধরেন বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তার প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো—
✅ সাইবার বুলিং ও হয়রানি
✅ ভুল তথ্যের প্রসার ও গুজব
✅ ডাটা প্রাইভেসি ও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা
তারা উল্লেখ করেন, তরুণদের জন্য নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ গঠনে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
প্রফেসর শামীম আল মামুন, ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বলেন, “বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তার গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার যেমন তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করছে, তেমনি সাইবার অপরাধের ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে অনলাইন নিরাপত্তা সম্পর্কে জ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।”
তানভীর চৌধুরী, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, সাবধানে অনলাইনে ক্যাম্পেইন, জাগো ফাউন্ডেশন বলেন, “এটি শুধু একটি সংলাপ নয়, বরং এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি রোডম্যাপ। তরুণরা যেন অনলাইনে নিরাপদ থাকতে পারে এবং দায়িত্বশীল ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে, সে জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।”
সংলাপ শেষে অংশগ্রহণকারীরা ভবিষ্যতে ডিজিটাল নিরাপত্তা উদ্যোগ নিয়ে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। ‘সাবধানে অনলাইনে’ ক্যাম্পেইনের সুপারিশগুলোকে বাস্তবায়ন করে অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
এ ধরনের উদ্যোগ তরুণদের ডিজিটাল দক্ষতা ও নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল ভবিষ্যৎ আরও নিরাপদ ও টেকসই হবে বলে আশা করা যায়।