বর্ষসেরা মোবাইল অপারেটর হিসেবে স্বীকৃতি পেল গ্রামীণফোন
ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিকরণে অনন্য ভূমিকা এবং টেলিযোগাযোগ খাতে উৎকর্ষতা প্রদর্শনের স্বীকৃতি হিসেবে এশিয়ান টেলিকম অ্যাওয়ার্ড ২০২৫-এ “মোবাইল অপারেটর অব দ্য ইয়ার – বাংলাদেশ” এবং “ইএসজি ইনিশিয়েটিভ অব দ্য ইয়ার – বাংলাদেশ” পুরস্কার অর্জন করেছে গ্রামীণফোন। সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটি এ স্বীকৃতি লাভ করে।

দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন বর্তমানে প্রায় ৮.৫ কোটি গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে, যা বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠীর সমান। ২২ হাজারের বেশি টাওয়ার স্থাপনের মাধ্যমে অপারেটরটি দেশের ৯৫% এলাকা ও ৯৯% জনগোষ্ঠীকে নেটওয়ার্কের আওতায় এনেছে।
ডিজিটাল সংযোগ উন্নয়নের অঙ্গীকার নিয়ে গ্রামীণফোন ২০২২ সালে দেশে প্রথম ফাইভজি প্রযুক্তির পরীক্ষা চালায়। একই সঙ্গে ‘আলো’ ইউনিফায়েড আইওটি সল্যুশন এবং মাইজিপি অ্যাপের মাধ্যমে সেরা গ্রাহক অভিজ্ঞতা প্রদান করছে। বর্তমানে মাইজিপি দেশের শীর্ষ সেলফ-সার্ভিস অ্যাপ হিসেবে স্বীকৃত।
টেকসই উন্নয়নে গ্রামীণফোনের ভূমিকা
পরিবেশবান্ধব উদ্যোগের অংশ হিসেবে গ্রামীণফোন ১২০০-এর বেশি সৌরশক্তিচালিত নেটওয়ার্ক টাওয়ার পরিচালনা করছে। এর মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস ও বিদ্যুৎ-সংকটপূর্ণ এলাকাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ও নারীর ক্ষমতায়ন
২০২৩ সালের মার্চে চালু হওয়া “ইন্টারনেটের দুনিয়া সবার (আইডিএস)” প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণফোন ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনতে কাজ করছে। এই প্রকল্পের আওতায় দেশের ২০০০টি ইউনিয়নে লক্ষাধিক গ্রামীণ নারীকে ডিজিটাল দক্ষতা ও অনলাইন সেবাগুলোর সঙ্গে পরিচয় করানো হচ্ছে।
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে নারীদের ডিজিটাল সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবা, কুইজ, ইন্টারঅ্যাকটিভ কার্যক্রম এবং প্রয়োজনীয় ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে পুরুষ-নারীর অনুপাত প্রায় ৭০:৩০। নারীদের ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই বৈষম্য কমানোর লক্ষ্যে কাজ করছে আইডিএস। নকিয়া, ঢাকা ব্যাংক ও প্রথম আলোর মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এ কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।
গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার ফারহা নাজ জামান বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, ইন্টারনেট ও সংযোগের শক্তি সমাজের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি। ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিকে আরও এগিয়ে নিতে এবং গ্রাহকদের সর্বোত্তম সেবা প্রদান করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই পুরস্কারগুলো আমাদের উদ্ভাবনী ও টেকসই কার্যক্রমের স্বীকৃতি। বাংলাদেশের ডিজিটাল উন্নয়নে কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে, তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।”
এশিয়ান টেলিকম অ্যাওয়ার্ডস হলো এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম সম্মানজনক স্বীকৃতি, যা টেলিযোগাযোগ খাতে বিশেষ অবদান রাখা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রদান করা হয়। এ পুরস্কার অর্জন গ্রামীণফোনের টেলিযোগাযোগ খাতে নেতৃত্ব ও উদ্ভাবনী সেবার প্রতিফলন।