যুক্তরাষ্ট্রের চিপ নিয়ন্ত্রণে বড় ধাক্কা খেল স্যামসাং, মুনাফা কমেছে ৫৬ শতাংশ
বিশ্বের অন্যতম প্রযুক্তি জায়ান্ট স্যামসাং ইলেকট্রনিকস দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম মুনাফা অর্জন করেছে। কোম্পানিটির দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চীনে উন্নত এআই চিপ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
স্যামসাংয়ের হিসেব মতে, এপ্রিল থেকে জুন মেয়াদে তাদের অপারেটিং প্রফিট দাঁড়িয়েছে ৪.৬ ট্রিলিয়ন ওয়নে। যা বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসিত ৬.২ ট্রিলিয়ন ওয়নের তুলনায় অনেক কম। গত বছরের একই সময়ে এ মুনাফা ছিল ১০.৪ ট্রিলিয়ন ওয়ন।

এটি গত ছয় প্রান্তিকের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল মুনাফা, যেখানে রাজস্ব প্রায় স্থির থেকে দাঁড়িয়েছে ৭৪ ট্রিলিয়ন ওয়নে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে নভিডিয়া-র মতো বড় ক্রেতার কাছে উচ্চ ব্যান্ডউইথ মেমরি (HBM) চিপ সরবরাহে বিলম্ব হওয়াটাই বড় একটি কারণ মুনাফা পতনের। মার্চ মাসে স্যামসাং ঘোষণা দিয়েছিল, তাদের নতুন HBM 3E চিপ জুনের মধ্যে প্রস্তুত হবে। তবে জুলাইয়ে এসে এখনও নভিডিয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সরবরাহ তথ্য দেয়নি তারা।
এই সুযোগে প্রতিদ্বন্দ্বী SK hynix এবং Micron কোম্পানিগুলো মার্কিন বাজারে ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে এআই চিপের সরবরাহ, ফলে স্যামসাং পিছিয়ে পড়েছে।
স্যামসাংয়ের ব্যবসা অনেকাংশেই চীন নির্ভর, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ এখন কঠিন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া স্থানীয় প্রতিযোগীদের সাথে চাপা লড়াই আরও সমস্যার সৃষ্টি করছে।
বিশ্লেষক রিউ ইয়ং-হো বলেন, “স্যামসাংয়ের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ এখন HBM চিপে প্রতিযোগিতা ফিরে পাওয়া।”
তাদের মতে, নিষেধাজ্ঞার কারণে চিপ ইউনিটে মুনাফা কমে মাত্র ৫০০ বিলিয়ন ওয়নে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৯০% কম।
সংকট কাটিয়ে উঠতে স্যামসাং ইতোমধ্যে ৩.৯ ট্রিলিয়ন ওয়ন মূল্যের শেয়ার পুনঃক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে। যা গত বছরের ঘোষিত ১০ ট্রিলিয়ন ওয়নের পরিকল্পনার অংশ।
তারা আশাবাদী, নতুন ফোন লঞ্চ এবং নভিডিয়া ছাড়া অন্যান্য ক্লায়েন্টদের কাছে HBM চিপ সরবরাহ বাড়িয়ে ভবিষ্যতে লাভজনকতা আবারো ফিরিয়ে আনতে পারবে।
এদিকে, স্যামসাংয়ের ফাউন্ড্রি (চিপ তৈরির) ব্যবসায়ও যুক্তরাষ্ট্রের এক্সপোর্ট কন্ট্রোল ও ইনভেন্টরি রাইটডাউন-এর কারণে আয় হ্রাস পেয়েছে।