টানা ১২তম বারের মতো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৫ বাংলাদেশ পর্বের আয়োজন করতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে বেসিস আজ বৃহস্পতিবার একটি সংবাদ সম্মেলন করেছে।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ : প্রযুক্তির বিশ্বমঞ্চ
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) প্রতিবছর নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ আয়োজন করে। বিশ্বের ১৮৫টিরও বেশি দেশের প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, ডিজাইনার, শিক্ষাবিদ ও উদ্যোক্তাদের একত্রিত করে বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করাই এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য।
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে এই প্রতিযোগিতায় চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে, যার মধ্যে তিনবার তারা টানা শীর্ষস্থানে ছিল। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ও ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্য আনতে এবারও বেসিস বাংলাদেশের ৯টি শহরে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ, ও কুমিল্লা) প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি
এ বছরও প্রতিযোগীদের দক্ষতা বাড়াতে নানাবিধ কার্যক্রম, ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও ডাটা বুট ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে।
🔹 বিশেষজ্ঞ মেন্টর: অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে তাদের প্রকল্পের উন্নয়নে সহায়তা করবেন অভিজ্ঞ মেন্টররা।
🔹 টেকনিক্যাল সাপোর্ট: প্রতিটি টিমকে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হবে।
🔹 ডাটা বুট ক্যাম্প: শিক্ষার্থীদের ডাটা বিশ্লেষণের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অনলাইন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি।
আজ থেকেই আগ্রহীরা অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন: 👉 https://nsac.basis.org.bd/
বেসিসের লক্ষ্য ও প্রত্যাশা
বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির বলেন, “বাংলাদেশের উদ্ভাবনী শক্তি ও প্রযুক্তি দক্ষতাকে বৈশ্বিক মঞ্চে তুলে ধরতে বেসিস প্রতিবারই নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ আয়োজন করে আসছে। টানা চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া আমাদের মেধাবী তরুণদের প্রতিভারই প্রমাণ। আমরা আশাবাদী, এবারও বাংলাদেশ সেরা উদ্ভাবনী সমাধান তৈরি করে বিশ্বকে মুগ্ধ করবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে কাজ করছি। ১২তম বারের মতো এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছি, এবং আশা করি, এবারও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।”
২০২৫ সালের লক্ষ্য : ২ লাখ শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততা
প্রতিযোগিতার এই আসরে এবার ২ লাখ শিক্ষার্থীকে সরাসরি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি উদ্ভাবনী চিন্তাধারা ও বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের এক অনন্য প্ল্যাটফর্ম।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের উপদেষ্টা মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান বলেন,“দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়ার্কশপ ও সেমিনার শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা বিকাশে সহায়তা করবে। পাশাপাশি, ডাটা বুথ ক্যাম্প ও বিশেষজ্ঞ মেন্টরের সহায়তা প্রতিযোগীদের প্রকল্প উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছে, এবার বিশ্বকে দেখানোর সময় যে, আমরা প্রযুক্তিতে কতটা এগিয়ে।”
বেসিসের উদ্যোগে আয়োজিত নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৫ বাংলাদেশের তরুণ উদ্ভাবকদের জন্য একটি অনন্য সুযোগ। টানা চারবারের সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবারও দেশের শিক্ষার্থীরা বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের সৃজনশীলতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রমাণ করবে—এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
