বিশ্বের শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এখনও ভুয়া অ্যাকাউন্টের ভীষণ চাপে রয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত মেটার স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর) ফেসবুকের বৈশ্বিক সক্রিয় ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৩ শতাংশ অ্যাকাউন্ট ভুয়া ছিল।
ভুয়া অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে ফেসবুক
ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা জানিয়েছে, ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত এবং সরানোর লক্ষ্যে কোম্পানি নিয়মিত কাজ করছে। ২০২৪ সালের হালনাগাদ তথ্য অনুসারে, ফেসবুকের মোট ব্যবহারকারী সংখ্যা এখন ৩০০ কোটি ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধু গত বছরই ভুয়া, নীতিমালাবিরোধী ও সন্দেহজনক কার্যকলাপের অভিযোগে ১৪০ কোটি অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মেটার দাবি, তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নির্ভর স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি এবং মানব পর্যবেক্ষণের সমন্বয়ে নিয়মিত ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত ও অপসারণে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ফেসবুকে ব্যবসা বা পোষা প্রাণীর নামে অ্যাকাউন্টও ভুয়া
মেটা জানিয়েছে, যে অ্যাকাউন্টগুলো প্রকৃত ব্যক্তিকে উপস্থাপন করে না, সেগুলো ভুয়া অ্যাকাউন্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়। অনেক ব্যবহারকারী ব্যক্তি নয়, বরং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পোষা প্রাণী, কিংবা ফেক পরিচয়ে প্রোফাইল খুলে ফেসবুক ব্যবহার করে। এ ছাড়া রয়েছে স্প্যাম ছড়ানো, ভুল তথ্য প্রচার, বট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভুয়া কার্যকলাপ পরিচালনা এবং অন্যের ছদ্মবেশ ধারণ করার প্রবণতা।
স্প্যাম-ভুয়া অ্যাকাউন্ট ফেসবুকের দীর্ঘদিনের সমস্যা
বিশ্বজুড়ে ৩০০ কোটি সক্রিয় ব্যবহারকারী থাকা সত্ত্বেও ভুয়া প্রোফাইল বরাবরই ফেসবুকের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। মেটার হিসাবে, ২০১৯ সাল থেকে প্রতি প্রান্তিকে গড়ে এক বিলিয়নের বেশি ভুয়া অ্যাকাউন্ট সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।
তবে গত বছর থেকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত এবং অপসারণের সংখ্যা কিছুটা কমেছে।
ক্ষতিকর ভুয়া অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান
মেটা বলছে, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব ক্ষতির উদ্দেশ্যে তৈরি হওয়া অ্যাকাউন্টগুলো শনাক্ত এবং সরানো। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে সেই অ্যাকাউন্টগুলো, যেগুলো স্প্যাম ছড়ানো, প্রতারণা, কিংবা আর্থিক লাভের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, “ভুয়া প্রোফাইল শনাক্তে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নীতিমালা লঙ্ঘনের উদ্দেশ্যে খোলা অ্যাকাউন্টগুলো আমরা দ্রুত সরিয়ে ফেলতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”
