প্রযুক্তি সংবাদ

ফোন নম্বর ছাড়াই মেসেজিং ও কলের সুবিধা দেবে ‘এক্সচ্যাট’

ইলন মাস্কের নতুন চমক

5/5 - (1 vote)

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (পূর্বের টুইটার)–এর মালিক ইলন মাস্ক আবারও আলোচনায়। এবার তিনি চালু করলেন নতুন একটি প্রাইভেট কমিউনিকেশন প্ল্যাটফর্ম, যার নাম ‘এক্সচ্যাট’। এটি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এবং সিগন্যালের মতো অ্যাপগুলোর বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হলো—এই অ্যাপে ফোন নম্বর ছাড়াই মেসেজিং ও কল করা যাবে।

ফোন নম্বর ছাড়াই মেসেজিং ও কলের সুবিধা দেবে ‘এক্সচ্যাট’
ফোন নম্বর ছাড়াই মেসেজিং ও কলের সুবিধা দেবে ‘এক্সচ্যাট’

কী আছে এক্সচ্যাট-এ?

ইলন মাস্কের লক্ষ্য হলো এক্সকে ধীরে ধীরে একটি ‘অল-ইন-ওয়ান’ বা সবকিছু একসাথে থাকা অ্যাপে রূপান্তরিত করা। এক্সচ্যাট সেই বৃহৎ পরিকল্পনারই একটি অংশ। এই নতুন টুলটি এক্স-এর মধ্যেই একীভূত থাকবে এবং ব্যবহারকারীরা একটি আলাদা অ্যাপ ছাড়াই সরাসরি এতে চ্যাট করতে পারবেন।

এক্সচ্যাটের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

  • বিটকয়েন স্টাইল এনক্রিপশন, যা অত্যন্ত নিরাপদ ও জটিল সুরক্ষা প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
  • ফোন নম্বর ছাড়াই বার্তা পাঠানো এবং কল করা সম্ভব—এটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি।
  • স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যাওয়া বার্তা (auto-delete)—যা চ্যাটের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।
  • ক্রস-প্ল্যাটফর্ম অডিও এবং ভিডিও কলিং—বিভিন্ন ডিভাইসের মধ্যেও সহজেই সংযোগ করা যাবে।
  • চার ডিজিটের পাসকোড দিয়ে নিরাপদ অ্যাক্সেস

সীমিত পরিসরে চালু

এই মুহূর্তে এক্সচ্যাট বেটা ভার্সনে রয়েছে এবং এটি শুধু নির্দিষ্ট কিছু পেইড সাবস্ক্রিপশনধারীদের জন্য উন্মুক্ত। ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন স্থাপত্যে তৈরি অ্যাপ, যা নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে।

জনপ্রিয় অ্যাপগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বী

মাস্ক এক্সচ্যাটকে হোয়াটসঅ্যাপ, সিগন্যাল, ও টেলিগ্রামের মতো অ্যাপগুলোর সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উপস্থাপন করছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি মেসেজিং জগতে নতুন ধারা তৈরি করতে পারে—বিশেষ করে এমন সময়, যখন ব্যবহারকারীরা তাদের গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা নিয়ে আরও বেশি সচেতন হয়ে উঠেছেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

এক্সচ্যাট শুধু চ্যাটিং টুল নয়। ইলন মাস্ক ভবিষ্যতে এই অ্যাপের মাধ্যমে মেসেজিং, অর্থপ্রদান (পেমেন্ট), মিডিয়া শেয়ারিং এমনকি ডেটিং ফিচারও যুক্ত করার পরিকল্পনা করছেন। তার লক্ষ্য হলো চীনা প্ল্যাটফর্ম উইচ্যাট-এর মতো একটি মাল্টিফাংশনাল সুপার অ্যাপ তৈরি করা, যেখানে ব্যবহারকারী একটি অ্যাপেই প্রতিদিনের যাবতীয় কাজ সারতে পারবেন।

বাজার পরিস্থিতি ও প্রাসঙ্গিকতা

এই উদ্যোগ এমন সময় আসছে, যখন হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রামও ধাপে ধাপে তাদের এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন সেবা উন্নত করছে। হোয়াটসঅ্যাপে ইতোমধ্যেই ডিফল্টভাবে এই সেবা চালু রয়েছে, কিন্তু ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে তা এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।

এক্সচ্যাটের আগমন শুধু একটি নতুন অ্যাপ নয়, বরং এটি ব্যক্তিগত যোগাযোগ ও নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ফোন নম্বরের বাধ্যবাধকতা ছাড়াই এ ধরনের একটি চ্যাট অ্যাপ আধুনিক প্রজন্মের চাহিদার সাথে মানানসই হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, ইলন মাস্কের এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী মেসেজিং প্ল্যাটফর্মগুলোর বাজারে কী ধরনের পরিবর্তন আনে।

Related Articles

Back to top button