কিভাবে করবো

২০ হাজার মার্কিন ডলার বাংলাদেশের কত টাকা?

5/5 - (2 votes)

মনে আছে, একবার আমি আর আমার বন্ধু রাত জেগে হিসাব করছিলাম, যদি আমাদের দুজনের কাছে ২০ হাজার ডলার থাকে, তাহলে সেটা দিয়ে বাংলাদেশে কী কী করা যেতে পারে? হিসাবটা বেশ মজার ছিল, কারণ টাকার অঙ্কটা ছোট নয়, আবার খুব বড়ও নয়। ২০ হাজার ডলার মানে কিন্তু বেশ একটা অ্যামাউন্ট! আজকের ব্লগ পোস্টে আমরা সেটাই দেখবো – ২০ হাজার মার্কিন ডলার বাংলাদেশের কত টাকা, আর এই টাকা দিয়ে আপনি কী কী করতে পারেন।

২০ হাজার মার্কিন ডলার বাংলাদেশের কত টাকা?
২০ হাজার মার্কিন ডলার বাংলাদেশের কত টাকা?

২০ হাজার ডলার : টাকার হিসাবে কতো দাঁড়াচ্ছে?

আচ্ছা, প্রথমে একটু ঝটপট হিসাব করে নেয়া যাক। ডলারের দাম তো ওঠানামা করে, তাই আজকের তারিখের (এখানে প্রকাশের তারিখ উল্লেখ করুন) হিসেবে জেনে নেয়া যাক। সাধারণত, ব্যাংকগুলো এবং বিভিন্ন অনলাইন কারেন্সি কনভার্টার এই তথ্য দিয়ে থাকে।

ধরা যাক, আজকের দিনে ১ মার্কিন ডলার = ১১০ টাকা। তাহলে, ২০,০০০ ডলার হবে:

২০,০০০ ডলার x ১১০ টাকা/ডলার = ২২,০০,০০০ টাকা (বাইশ লক্ষ টাকা)।

তাহলে বুঝতেই পারছেন, ২০ হাজার ডলার মানে কিন্তু বেশ বড় একটা অঙ্ক!

ডলারের বিনিময় হার : কেন এতো ওঠানামা করে?

ডলারের দাম সব সময় একই থাকে না। এটা কম বেশি হয়, কারণ supply এবং demand এর একটা খেলা চলে সবসময়। অর্থনীতির ভাষায়, অনেকগুলো বিষয় এর ওপর প্রভাব ফেলে, যেমন:

  • দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা
  • আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য
  • রাজনৈতিক পরিস্থিতি
  • আন্তর্জাতিক বাজারের অবস্থা

এই কারণগুলোর জন্যেই ডলারের রেট পরিবর্তন হয়, তাই সবসময় আপ-টু-ডেট থাকা ভালো।

আরো পড়ুন – পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?

এই টাকায় আপনি কী কী করতে পারেন?

বাইশ লক্ষ টাকা! এটা দিয়ে অনেক কিছুই করা সম্ভব। চলুন, কিছু আইডিয়া দেয়া যাক:

ছোটখাটো ব্যবসা শুরু

এই টাকা দিয়ে আপনি নিজের একটি ছোট ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যেমন:

  • অনলাইন শপ: কাপড়ের ব্যবসা, হাতে তৈরি গয়না, অথবা অন্য কোনো পছন্দের জিনিস বিক্রি করতে পারেন।
  • খাবারের দোকান: ছোট একটি ফাস্ট ফুডের দোকান অথবা একটি কেকের শপ দিতে পারেন।
  • ফ্রিল্যান্সিং এজেন্সি: যদি আপনার কিছু বিষয়ে দক্ষতা থাকে, তাহলে একটি ফ্রিল্যান্সিং এজেন্সি শুরু করতে পারেন।

শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ

নিজের বা পরিবারের কারো জন্য ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করতে পারেন।

  • উচ্চশিক্ষা: দেশের বাইরে মাস্টার্স বা অন্য কোনো ডিগ্রি নেয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • স্কিল ডেভেলপমেন্ট: বিভিন্ন ট্রেনিং বা কর্মশালায় অংশ নিয়ে নিজের দক্ষতা বাড়াতে পারেন।

জমিতে বিনিয়োগ

গ্রামে বা শহরের আশেপাশে জমি কিনে ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করতে পারেন।

একটি ছোট বাড়ি তৈরি

শহরে না হলেও গ্রামের দিকে এই টাকায় সুন্দর একটি ছোট বাড়ি তৈরি করা সম্ভব।

গাড়ি কেনা

একটি পুরাতন বা নতুন ছোট আকারের গাড়ি কেনা যেতে পারে, যা ব্যক্তিগত এবং পেশাগত কাজে ব্যবহার করা যাবে।

ঋণ পরিশোধ

যদি আপনার কোনো ঋণ থাকে, তাহলে সেটি পরিশোধ করে আর্থিক চাপ কমাতে পারেন।

ভ্রমণ

দেশের বাইরে সুন্দর কোনো স্থানে ঘুরে আসতে পারেন।

কোথায় টাকা রাখবেন: কিছু টিপস

এতগুলো টাকা হাতে পেলে সেটা কোথায় রাখবেন, সেটা একটা চিন্তার বিষয়। কিছু অপশন নিচে আলোচনা করা হলো:

  • ব্যাংক একাউন্ট: টাকা রাখার সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা হলো ব্যাংক। এখানে টাকা রাখলে ইন্টারেস্টও পাওয়া যায়।
  • ফিক্সড ডিপোজিট: ফিক্সড ডিপোজিটে টাকা রাখলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর ভালো ইন্টারেস্ট পাওয়া যায়।
  • শেয়ার মার্কেট: তবে শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করার আগে ভালোভাবে জেনে বুঝে ইনভেস্ট করা উচিত।

সঞ্চয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম

টাকা জমানো যেমন জরুরি, তেমনি সেটা সঠিক ভাবে ব্যবহার করাও দরকারি। এখানে কিছু টিপস দেওয়া হলো:

  • নিজের একটা বাজেট তৈরি করুন।
  • খরচগুলো হিসাব করে দেখুন, কোথায় কোথায় কমানো যায়।
  • কিছু টাকা আলাদা করে সরিয়ে রাখুন, যা আপনি ভবিষ্যতে ব্যবহার করতে পারবেন।

২০ হাজার মার্কিন ডলার বাংলাদেশের কত টাকা নিয়ে কিছু সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

ডলারের রেট কিভাবে জানব?

ডলারের রেট জানার জন্য আপনি বিভিন্ন অনলাইন কারেন্সি কনভার্টার ওয়েবসাইট, যেমন গুগল ফাইন্যান্স (Google Finance) দেখতে পারেন। এছাড়াও, বিভিন্ন ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকেও জানতে পারবেন।

টাকা কি সবসময় সেইফ থাকবে?

যদি আপনি ব্যাংকে টাকা রাখেন, তাহলে সাধারণত টাকা সেইফ থাকে। তবে অন্য কোথাও ইনভেস্ট করার আগে ভালোভাবে জেনে নেবেন।

ডলার কি আরও বাড়বে?

ডলারের দাম ভবিষ্যতে বাড়বে কিনা, সেটা বলা কঠিন। এটা অর্থনীতির ওপর নির্ভর করে।

আমি কি এখন ডলার কিনে রাখব?

ডলার কিনে রাখবেন কিনা, সেটা আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে কেনার আগে মার্কেট অ্যানালাইসিস করে নেয়া ভালো।

রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে ডলারের ভূমিকা কী?

রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে ডলার খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ, বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা ডলারে আসে, যা পরে টাকায় পরিবর্তন করা হয়।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর ডলারের প্রভাব কি?

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর ডলারের সরাসরি প্রভাব আছে। ডলার রিজার্ভ বেশি থাকলে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী থাকে।

ডলারের দাম বাড়লে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কি প্রভাব পড়ে?

ডলারের দাম বাড়লে আমদানি করা জিনিসের দাম বেড়ে যায়, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে।

ব্যাংকে ডলারের বিনিময় হার কিভাবে নির্ধারিত হয়?

ব্যাংকে ডলারের বিনিময় হার সাধারণত মার্কেট এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।

ডলার কেনাবেচার সময় কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত?

ডলার কেনাবেচার সময় রেট, নিরাপত্তা এবং বিশ্বস্ততা এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত।

তাহলে, ২০ হাজার ডলার মানে বাংলাদেশের আজকের বাজারে কতো টাকা, তার একটা ধারণা আমরা পেলাম। আর এই টাকা দিয়ে কী কী করা যেতে পারে, সে সম্পর্কেও কিছু আইডিয়া দেওয়া হলো। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নিজের প্রয়োজন এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া।

আপনি যদি এই টাকা দিয়ে অন্য কিছু করার পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন। আপনার আইডিয়া অন্যদেরকেও উৎসাহিত করতে পারে! আর হ্যাঁ, ডলারের দামের দিকে খেয়াল রাখুন, ভালো সুযোগ পেলে কাজে লাগান।

Related Articles

Back to top button